Notification texts go here Contact Us Download Now!
Posts

সিনওয়ার হত্যারহস্য


সিনওয়ারকে হত্যা করার ঘটনাটি বেশ আশ্চর্যজনক ছিল। কারণ ড্রোন, ইলেকট্রনিক ইভড্রপিং ডিভাইস এবং মানব তথ্যদাতাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়েও হাজার হাজার ইসরায়েলি সেনা তার অবস্থান শনাক্ত করতে পারছিল না। 

মূল ভবনে আ’ঘা’ত করার সময় তিনি গ্রাউন্ড ফ্লোরে ছিলেন। ভবনের চারদিক ঘিরে ফেলে দা’ন’ব বাহিনী। ওদের উপস্থিতি টের পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি উপরের তলায়, ঠিক যেখানে তিনি লুকিয়ে থাকতেন, সেখানে চলে গেলেন। তাঁর এর দৌড়ঝাঁপ দেখে ফেলে ওরা। উপরে ওঠার মুহূর্তেই ওরা আবার তাঁকে লক্ষ করে ট্যা’ঙ্ক থেকে হা’ম’লা চালায়। তিনি মা’রা’ত্ম’কভাবে আ’হ’ত হন এবং একটা হাত শরীর থেকে বি‘চ্ছি’ন্ন হয়ে যায়। তিনি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে তাঁর জায়গায় গিয়ে বসলেন। এরমধ্যে শ’য়’তা’ন বা‘হিনী তোড়জোড় করে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে লাগল। তিনি তা টের পেয়ে এক হাতেই দু দুটো গ্রে’নে’ড নিক্ষেপ করেন ওদেরকে ল’ক্ষ্য করে। ওরা সাহস হারিয়ে ফেলল। যে গতিতে উপরে ওঠার চেষ্টা করেছিল তারচেয়ে দ্বিগুণ গতিতে পুনরায় নিচে নেমে গেল। 

বাহিরে রুদ্ধদ্বার বৈঠক। সিদ্ধান্ত হল ড্রো’ন প্রবেশ করিয়ে তাঁর অবস্থান শনাক্ত করা। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ড্রো’ন ব্যবহার করল তারা। তিনি শরী’র থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার র’ক্তা’ক্ত হাত নিয়ে দেখছিলেন সব। তাঁর এক হাতে ছিল লাঠি। যখন ড্রো’ন তাঁর কাছাকাছি আসল ঠিক তখনই তিনি লাঠি নিক্ষেপ করলেন ড্রো’ন এর উদ্দেশ্যে। তাঁর এই অবস্থান শনাক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরো বিল্ডিং গু’ড়ি’য়ে দেওয়ার মতো শক্তিশালী ট্যাং’ক শে’ল্ড ব্যবহার করল ওরা এবং তিনিও তাঁর সামনের কাতারে থেকে লড়াই করার এক অবিস্মরণীয় ও ঐতিহাসিক অভিযাত্রা শেষ করলেন।  

_________________________________________________

ইসরায়েলের ডিফেন্স ফোর্সের (আইডিএফ) মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হ্যাগারি আগেই ঘোষণা করেছিলেন, ‘কমান্ডার ইয়াহিয়া সিনওয়ার ... এবং তিনি একজন মৃত ব্যক্তি।

৬১ বছর বয়সী সিনওয়ার মূলত আবু ইব্রাহিম নামে পরিচিত। সিনওয়ার তার যৌবনের একটি বড় অংশ- ২২ বছরেরও বেশি সময় ইসরায়েলি কারাগারে কাটিয়েছেন। ১৯৮৮ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত তিনি ইসরায়েলি কারাগারে কাটিয়েছেন।


তার বাবা-মা ফিলিস্তিনের আশকেলনে বসবাস করতেন। কিন্তু ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার পর ‘আল-নাকবা (বিপর্যয়)’ যুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের পৈতৃক বাড়ি ইসরায়েলিরা দখল করার পর উদ্বাস্তু হয়েছিলেন। 

সিনওয়ার খান ইউনিস সেকেন্ডারি স্কুল ফর বয়েজ থেকে শিক্ষা লাভ করেন। তারপর গাজার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি থেকে আরবি ভাষায় স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। সিনওয়ার ১৯৮২ সালে ১৯ বছর বয়সে ‘ইসলামপন্থী’ হওয়ায় ইসরায়েল তাকে প্রথম গ্রেপ্তার করে এবং এরপর ১৯৮৫ সালে আবার গ্রেপ্তার হন।

এই সময়েই তিনি হামাসের প্রতিষ্ঠাতা শেখ আহমেদ ইয়াসিনের আস্থা অর্জন করেছিলেন।

তেল আবিবের ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্টাডিজের একজন সিনিয়র গবেষক কোবি মাইকেল বলেছেন, “দুইজন ‘খুব, খুব ঘনিষ্ঠ’ হয়ে উঠেছিলেন। ১৯৪৭ সালে হামাস প্রতিষ্ঠিত হওয়ার দুই বছর পর তিনি গ্রুপের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা আল-মাজদ প্রতিষ্ঠা করেন। তখন তার বয়স মাত্র ২৫ বছর ছিল।”


আল-মাজদ তথাকথিত নৈতিকতা অপরাধের জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তিদের শাস্তি দিত। ‘যৌন ভিডিও’ রাখছে এমন দোকানগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করছিল। সেই সঙ্গে ইসরায়েলকে সহযোগিতা করছে এমন সন্দেহভাজন কাউকে পেলে হত্যা করত। ১৯৮৮ সালে সিনওয়ার দুই ইসরায়েলি সেনাকে অপহরণ ও হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। একই বছর তাকে আবার গ্রেপ্তার করা হয় এবং ১২ ফিলিস্তিনিকে হত্যার জন্য ইসরায়েল তাকে দোষী সাব্যস্ত করে এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়।


হামাস গত জুলাই মাসে তেহরানে তাদের সামগ্রিক নেতা ইসমাইল হানিয়াহকে হত্যার জন্য ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করেছে। পলাতক থাকা সত্ত্বেও এর পরের মাসে সিনওয়ারকে তার উত্তরসূরি হিসেবে নামকরণ করা হয়েছিল।


- লেখক : নজরুল ইসলাম, আমির হামজা 


Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.