ইসরায়েলের ডিফেন্স ফোর্সের (আইডিএফ) মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হ্যাগারি আগেই ঘোষণা করেছিলেন, ‘কমান্ডার ইয়াহিয়া সিনওয়ার ... এবং তিনি একজন মৃত ব্যক্তি।
৬১ বছর বয়সী সিনওয়ার মূলত আবু ইব্রাহিম নামে পরিচিত। সিনওয়ার তার যৌবনের একটি বড় অংশ- ২২ বছরেরও বেশি সময় ইসরায়েলি কারাগারে কাটিয়েছেন। ১৯৮৮ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত তিনি ইসরায়েলি কারাগারে কাটিয়েছেন।
তার বাবা-মা ফিলিস্তিনের আশকেলনে বসবাস করতেন। কিন্তু ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার পর ‘আল-নাকবা (বিপর্যয়)’ যুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের পৈতৃক বাড়ি ইসরায়েলিরা দখল করার পর উদ্বাস্তু হয়েছিলেন।
সিনওয়ার খান ইউনিস সেকেন্ডারি স্কুল ফর বয়েজ থেকে শিক্ষা লাভ করেন। তারপর গাজার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি থেকে আরবি ভাষায় স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। সিনওয়ার ১৯৮২ সালে ১৯ বছর বয়সে ‘ইসলামপন্থী’ হওয়ায় ইসরায়েল তাকে প্রথম গ্রেপ্তার করে এবং এরপর ১৯৮৫ সালে আবার গ্রেপ্তার হন।
এই সময়েই তিনি হামাসের প্রতিষ্ঠাতা শেখ আহমেদ ইয়াসিনের আস্থা অর্জন করেছিলেন।
তেল আবিবের ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্টাডিজের একজন সিনিয়র গবেষক কোবি মাইকেল বলেছেন, “দুইজন ‘খুব, খুব ঘনিষ্ঠ’ হয়ে উঠেছিলেন। ১৯৪৭ সালে হামাস প্রতিষ্ঠিত হওয়ার দুই বছর পর তিনি গ্রুপের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা আল-মাজদ প্রতিষ্ঠা করেন। তখন তার বয়স মাত্র ২৫ বছর ছিল।”
আল-মাজদ তথাকথিত নৈতিকতা অপরাধের জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তিদের শাস্তি দিত। ‘যৌন ভিডিও’ রাখছে এমন দোকানগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করছিল। সেই সঙ্গে ইসরায়েলকে সহযোগিতা করছে এমন সন্দেহভাজন কাউকে পেলে হত্যা করত। ১৯৮৮ সালে সিনওয়ার দুই ইসরায়েলি সেনাকে অপহরণ ও হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। একই বছর তাকে আবার গ্রেপ্তার করা হয় এবং ১২ ফিলিস্তিনিকে হত্যার জন্য ইসরায়েল তাকে দোষী সাব্যস্ত করে এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়।
হামাস গত জুলাই মাসে তেহরানে তাদের সামগ্রিক নেতা ইসমাইল হানিয়াহকে হত্যার জন্য ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করেছে। পলাতক থাকা সত্ত্বেও এর পরের মাসে সিনওয়ারকে তার উত্তরসূরি হিসেবে নামকরণ করা হয়েছিল।
- লেখক : নজরুল ইসলাম, আমির হামজা